ব্রণের গর্ত দূর করার ৮ টি ঘরোয়া রেমেডি !

ব্রণ!!! অনেকের কাছেই এটি বিশাল আতঙ্কের নাম। এমনকি ব্রণ সেরে উঠার পরও থেকে যায় এদের অবাঞ্ছিত দাগ। ব্রণের গর্তের দাগ ত্বকের সৌন্দর্য কমিয়ে দেয় অনেকটাই। অনেকেরই ব্রণের কাল দাগ চলে গেলেও রয়ে যায় অসুন্দর গর্তের দাগগুলো এবং সহজে যেতেও চায় না। আবার ত্বকের ক্ষতির কথা চিন্তা করে কেমিক্যাল জাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করাও সমীচীন নয়। তাই আসুন জেনে নেই একদম প্রাকৃতিক উপায়ে কেমন করে ব্রণের গর্ত নির্মূল করা যায়।

চলুন জেনে নেই ব্রণের গর্ত সারাতে আটটি প্রাকৃতিক উপায়ঃ

১. মুখে ব্রণের গর্ত সারিয়ে নিতে ভিটামিন ই –

 

ব্রনের গর্তের দাগ সারানোর জন্য সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর সমাধান হচ্ছে ভিটামিন ই তেল। এটি ব্রণের গর্তে যাদুর মত কাজ করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে ভিটামিন ই তেলের ব্যবহারে আপনার মুখমন্ডল হয়ে উঠবে দাগহীন ও উজ্জ্বল। এটি ব্রণের কালো দাগ সারাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন ই তেল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আর না পেলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করুন।

ভিটামিন ই তেল ব্যবহারের নিয়ম-

প্রথমে সমস্ত মুখমন্ডল তেলমুক্ত ফেইস ওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর একটা পরিষ্কার পিন বা সূঁচের সাহায্যে ক্যাপসুলটি ফুটো করে তেল নিঃসরণ করুন। তারপর পরিষ্কার হাত দিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। খুব বেশি তৈলাক্ত ত্বক হলে লাগানোর আধ ঘণ্টা পর টিস্যু পেপার দিয়ে অতিরিক্ত তেল চেপে চেপে তুলে নিন। নয়তো সারারাত লাগিয়ে রাখতে পারেন। সমস্যা খুব বেশি না হলে সপ্তাহে ২-৩ বার এভাবে করুন।

২.মুখে ব্রণের গর্ত সারিয়ে নিতে লেবুর রস –

লেবু সাইট্রিক এসিডের খুব ভালো উৎস। সাইট্রাস এসিড স্কার বা দাগ সারাতে অনবদ্য। কয়েক গ্লাস লেবুর শরবত পান করলে তার সাইট্রিক উপাদান আপনার দেহের ভেতর থেকে মরা কোষ সারিয়ে ত্বকের রঙ হালকা করতে সাহায্য করে।

লেবুর রস ব্যবহারের নিয়ম-

একটি মাঝারি আকারের লেবুর রস সমপরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে মুখে ঘষুন এতে গর্তের দাগ হালকা হবে। সময়ের সাথে সাথে আপনি পাবেন দাগ মুক্ত ত্বক।

৩. অ্যালোভেরা জেল-

মুখে ব্রণের গর্ত সারিয়ে নিতে অ্যালোভেরা জেল – Acnesolutionbd.com

অ্যালোভেরা জেল প্রকৃতির আশীর্বাদস্বরূপ। এই একটা উপাদান ত্বকের নানা রকম সমস্যা থেকে মু্ক্তি দেয়। টাটকা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। এখন বিভিন্ন সুপার শপগুলোতে অ্যালোভেরা পাওয়া যায়। সেখান থেকে কাঁচা অ্যালোভেরা কিনে জেল বের করে নিতে হবে। বাইরে থেকে কিনতে না চাইলে নিজের টবেও লাগাতে পারেন অ্যালোভেরা।

অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম-

প্রথমেই একটি আস্ত অ্যালোভেরা নিয়ে সেটিকে ছুঁরির সাহায্যে যে কোন এক দিক থেকে কাটুন। কাটলেই দেখবেন ভেতরে স্বচ্ছ জ়েলীর মত উপাদান, এটি ব্যবহার করুন। দিনে যতবার ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনাকে দেবে বিরক্তিকর ব্রণের গর্তের দাগ থেকে মুক্তি।

৪. টমেটো-

টমেটোতে আছে ভিটামিন এ, যা সেবামের (sebum) অতিরিক্ত ক্রিয়া বন্ধ করতে সক্রিয় ভূ্মিকা রাখে এবং ব্রণ ও ব্রণের দাগ দুটোই সারিয়ে তোলে। তাছাড়া এতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের ক্ষয়-ক্ষতি সারিয়ে তুলতেও সাহায্য করে।

দুই গালে টমেটো ব্যবহারের নিয়ম-

মাঝারি আকারের টাটকা টমেটো নিন। একে সমান ২ ভাগে ভাগ করুন। এবার দুই গালে প্রথমে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং তারপর ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ম্যাসাজ করুন। এতে যেমন গর্তের দাগ হালকা হবে, তদুপুরি রোদে পোড়া ভাবও কমবে। তাছাড়া এটি অনেক ভালো মেকআপ রিমুভারের কাজও করে থাকে।

৫. অলিভ অয়েল-

অলিভ অয়েল একটি জাদুকরী উপাদান। এটি শুধু খাদ্যদ্রব্যই সুস্বাদু করে না, এটি ত্বক পরিচর্যায় ও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এক্সট্রা ভারজিন অলিভ অয়েল দ্রুত ব্রণের গর্ত সারাতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল-এর ময়েশ্চারাইজিং গুণাগুণের কারণে এটি দ্রুত ত্বকের সাথে মিশে যায় এবং গর্ত সারাতে সাহায্য করে।

অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম-

অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল নিয়ে মুখ মন্ডলে মালিশ করুন এবং ভালো ফল পেতে ঘুম যাওয়ার আগে ব্যবহার করুন । ব্রণের গর্ত সারিয়ে নিতে এটি বেশ কার্যকরী।

৬. মধু-
মুখে ব্রণের গর্ত সারিয়ে নিতে মধু খুব কার্যকর! Acnesolutionbd.com

মধু একটি পরিচিত প্রাকৃতিক প্রসাধনী। প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার জন্য মধুর ব্যবহার প্রচলিত। মধুর মিষ্টতা খাবার হিসাবেও খুব ভালো। ফ্যাট কম থাকায় এটি আপনাকে ফিট থাকতে যেমন সাহায্য করে তেমনি নিয়মিত ব্যবহারে সারিয়ে তোলে ব্রণের গর্তের দাগ।

৭. বরফ কুচি-

পাতলা কাপড় বা তুলোতে একটা বরফের টু্করো নিয়ে গর্তের জায়গায় ১৫-২০ মিনিট ঘষে লাগান। এতে ত্বকে আরামদায়ক অনুভূতির পাশাপাশি সারিয়ে দেবে গর্তের দাগ।
ব্রণের গর্ত সারাতে আপনার ফেইস প্যাক-এ মেশান বেসন, টকদই ও শসার রস। এটি আপনার ত্বককে রাখবে দাগহীন, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

৮. অর্গানিক ফেইসপ্যাকের ব্যবহার-
ব্রণের গর্ত সারাতে আপনি যেকোনো অর্গানিক ফেইসপ্যাক  ব্যবহার করবেন। বিশেষ করে প্রাকৃতিক যে উপাদান গুলো এক্টিভ ব্রণ,এর দাগ ও পোরস রিমুভ করতে কার্যকর সেই ফেসপ্যাক গুলো ব্যবহার করতে হবে।যেমনঃ নিম ফেইসপ্যাক, রোজ ফেইসপ্যাক, চন্দন, মুলতানি মাটিঅরেঞ্জ ফেসপ্যাক, পাপায়া ফেইসপ্যাক, হলদি চন্দন, কস্তুরি হলুদ গুড়ো ইত্যাদি। আরও ভালো ফলাফল পেতে আপনার ফেইস প্যাক-এ মেশান বেসন, টকদই ও শসার রস। এটি আপনার ত্বককে রাখবে দাগহীন, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

ব্রণ ও ব্রণের গর্ত সারাতে সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে খাওয়া-দাওয়া এবং জীবনযাত্রা যেন সুস্থ ও পরিকল্পিত হয়। সঠিক ঘুম, খাওয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই পারে ব্রণ মুক্ত রাখতে। এতে ত্বকের অন্য্যন্য সমস্যা থেকেও পরিত্রাণ মেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *